Posts

Showing posts from June, 2020

অরুপকথার গল্প

আমি এক মেয়েকে চিনতাম যে ভার্সিটি লাইফে আরাম আয়েশ, মৌজ মস্তিতে জীবন না কাটিয়ে বিয়ের জন্য টাকা জমাতো। মেয়েটা ছিলো আমার রুমমেট। ইডেন কলেজে ক্যামেস্ট্রি নিয়ে পড়া এই মেয়েটা রোজ সকালে উঠে গ্রিন রোড থেকে ইডেন পর্যন্ত হেটে যেত দশ টাকা বাঁচানোর জন্য।  অথচ কেউ জিজ্ঞেস করলে হাসিমুখে বলতো, মুটিয়ে যাচ্ছিতো তাই হেটে যাই। কিন্তু আমি জানি সে অনাহারে থেকেও টাকা জমিয়ে যাচ্ছে বিয়ের জন্য।  মেয়েটার নাম ছিলো শান্তা। নামের মতো শান্ত শিষ্ট এই মেয়েটি প্রেম করতো ঢাকা ইউনিভার্সিটির এক ছেলের সাথে।   শান্তার মুখেই শুনেছি ছেলেটা ওর পাশের গ্রামে থাকতো। শান্তাকে দেখতে রোজ ছুটে আসতো কলেজ ছুটির সময়। এরপর ছেলেটা ঢাকায় এসে ভর্তি হয়। বছর দুই বাদে শান্তাও আসে ইডেনে ভর্তি হয়ে। শান্তার ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থা মোটামুটি। প্রতিমাসে ওকে একটা খরচ পাঠায়, ও নিজেও টিউশনি করিয়ে ভালো টাকা রোজগার করতো তবুও দিনাতিপাত করতো চাপিয়ে চাপিয়ে। সপ্তাহে একদিন মাংস কিনে সেটা রান্না করে সিংহভাগই নিয়ে যেত এই প্রেমিক পুরুষ টির জন্য। কখনো কখনো নিজের জন্য এক টুকরোও রাখতো না। আবার আফসোস করে বলতো,  "বুঝলি তোর ভাইয়া হলের মাছ মাংস খায় না। একটু শুচিবা

অংশীদার

- এই মামা যাবা? আধবয়সী রিক্সাওয়ালা তোরাব আলী মুখ তুলে তাকালো। দুইজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। - কই যাইবেন? - নিউ মার্কেটের মোড়ে।  জায়গাটা এইখান হতে বেশ দূরে। ডাক্তার তোরাব আলীকে টানা ১৫-২০ মিনিটের বেশি রিক্সা না চালাতে বলেছেন। না হয় হার্টের সমস্যাটা বেড়ে যাবে। তাছাড়া এখন রোজার মাস। রোজা রেখে অতদূরে রিক্সা নিয়ে যাওয়া সম্ভবও না।  না বলতে গিয়ে তোরাব আলী হঠাৎ থেমে গেল।  তার দশ বছরী ছেলেটা এইবার ঈদে নতুন জামা চেয়েছে। গত ঈদেও ছেলেটাকে কিছু কিনে দিতে পারে নি তোরাব আলী। বৌ টাও প্রতি ঈদে নির্বিকার থাকে। ঈদের দিনে ওদের দিকে তাকানো যায় না। এইবার ছেলে এবং বৌ এর আবদার রাখবে ভেবেছে সে।  সে বলল, "যাবো মামা। চলেন।" ছেলেগুলো জিজ্ঞেস করল, "কত নিবা?" - আশি ট্যাকা। সবাই যা নেয় তোরাব আলী সেটাই বলেছে। কিন্তু না! ছেলেগুলো আশি টাকায় যেতে নারাজ।  - আশি টাকা? সামান্য এই রাস্তা। তুমি আশি টাকা নিবা? আসার সময় তো পঞ্চাশ টাকা দিয়ে আসলাম। তোরাব আলী স্পষ্টই বুঝতে পারছে ছেলেগুলো মিথ্যা বলছে। কারণ সে ভালোমতোই জানে এইখান হতে মার্কেটের মোড়ে কখনও পঞ্চাশ টাকা রিক্সা ভাড়া হয় না। সর্বনিম্ন সেটা সত্তর-আশি টাকায় আসে

বুমেরাং

পাবলিক টয়লেটে ঢুকে ১৫০ মি.লি. পেপসির বোতলে পেশাব ভরে নিলো মোতালেব. বোতলটা হাতে নিয়ে সোজা নিউ মার্কেটের একটা দামি কাপড়ের দোকানে যেয়ে ঢুকলো.... ভালো একটা দামি পাঞ্জাবি দেখে আস্তে করে  বোতলটা পকেট থেকে বের করে, চট করে হাতের তালুতে একটু পেশাব ঢালে মোতালেব.... পাঞ্জাবিটা উল্টে পালটে দেখার ভান করে হাতের পেশাবগুলো ইচ্ছেমতো মাখে পাঞ্জাবিটাতে..... তারপর কাপড়ের দোকান থেকে বেরিয়ে একটা জুতার দোকানে ঢোকে.... একটা পিউর লেদারের সুন্দর জুতা বেছে নেয়... তারপর আরেকটু বড় সাইজ এনে দিতে বলে সেলসম্যান ছোকড়াটাকে.... আর এই সুযোগে হাতের নখ দিয়ে খুঁটে খুঁটে জুতোটার পাকা চামড়া তুলে নেয় এক পাশ দিয়ে.... তারপর আবার শো-কেইসে নিজেই রেখে দেয়... জুতোর দোকান থেকে বের হয়ে একটা শাড়ির দোকানে ঢোকে সে.... আর নিজের বউ-কে মানায় মত একটা শাড়ি খুঁজে বের করে...  তারপর পকেট থেকে কলমটা হাতের ভাজে লুকিয়ে, শাড়ি ঘেটে দেখার এক ফাঁকে ঘ্যাচ ঘ্যাচ করে ভাঁজ বরাবর তিন তিনটা ফুটো করে দেয়.... তারপর বাচ্চাদের দোকানে ঢুকে একটা বাচ্চাদের গেঞ্জি হাতে নেয়.... আড়চোখে ডানে বামে দেখে টাস করে মাঝখানের একটা বোতাম ছিড়ে নেয়.... ভালো করে চোখ না বুলালে কেউ

ইচ্ছে

বাইরে থেকে বাসায় পা রাখতেই ছুটে এলো মিতুল। "ভাইয়া,তাড়াতাড়ি এদিকে আয়' বলে আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই হাত ধরে টেনে বাবার রুমের সামনে নিয়ে গেলো। মা মেঝে থেকে পিরিচের ভাঙা অংশ হাতে তুলছেন।বাবার মুখ থমথম করছে। "চা ঠান্ডা হবে কেন শুনি? চিৎকার করে উঠলেন।এগুলোকে চা বলে। মা চুপচাপ ভাঙা টুকরো গুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলেন। মিতুলের দিকে তাকিয়ে পুনরায় খেকিয়ে উঠলেন বাবা " সমস্যা কি হা,এখানে কি তামাশা দেখা হচ্ছে?" আমাকে নিয়ে বলা শুরু করার আগেই মিতুলের হাত ধরে রুমে চলে আসলাম। বাবার রুম থেকে কথা ভেসে আসতে লাগলো। "নবাবপুত্তুর একেকজন।নাওয়া খাওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।খালি বসে বসে বাপের টাকার অন্ন ধ্বংস করা। উঠে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম।মিতুলের চোখের পানি দেখেও না দেখার ভান করে বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম। " জানিস ভাইয়া বাবা আজ আবার মায়ের গায়ে হাত তুলেছে।" চুপ করে রইলাম।কিছু বলার নেই।নিতান্ত প্রসঙ্গ বদলাবার জন্য বললাম"নাসেম ভাই বাসায় আসেনি এখনো? "এসেছিল।দুপুরে খেয়ে বেরিয়ে গেল আর আসেনি। " "রিয়াদি?" "রুমে।" "মিতুল যাওয়ার আগে ল

একটি ডিপ্রেশনের গল্প

বিয়ের প্রথম দিনেই শ্বাশুড়ি আমার হাতে একটা কুন্চি ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলো, বউমা আমার ছেলেটা অবুজ।মাঝে-মধ্যে ওই নাটক-টাটোক দেখে একটু পাগলামো করে। যদি সামলাতে না পারো কুন্চিটা ব্যবহার কইরো। আমি ও সম্মান সূচক হাসি দিয়ে বলেছিলাম,আম্মা একদম চিন্তা করবেন না।এখন আমি এসে গেছি আপনার ছেলে আর কোন পাগলামি করবে না। ওটা বরং আপনার কাছেই রাখুন।কিন্তু শ্বাশুড়ি নাছোড় বান্দা।কুন্চিটা দিয়েই তারপর ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো। জামাই দরজার কাছে এসেই চিল্লাতে লাগলো, কি করছেনটা কি? ঘোমটা দিন, ঘোমটা দিন। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে চুপসে গেছি।ভয়ে বিছানার তলা থেকে কুন্চি খুঁজতে লাগলাম। শ্বাশুড়ি আম্মা হয়তো এই জন্যই কুন্চিটা দিয়ে গেছে।কুন্চিটা নিয়ে এখুনি মারা শুরু করবো কি না ঠিক বুঝতে পারছি না। তারপর জামাই নিজে এসে আমার হাতটা ধরে মাথায় ঘোমটা দিতে দিতে বললো, জানেন আমার ভিষণ শখ বউ ঘোমটা দিয়ে থাকবে আমি এসে ঘোমটা খুলবো।আপনি একটু লজ্জা পাবেন। আমিও পাবো। একটা নাটকে দেখেছিলাম,ব্লা ব্লা.... জামাই নাটকের গল্প শুরু করেছে।আপাততো কুন্চিটা আর কোন কাজে লাগেনি। কত সহজ সরলভাবে জামাই নাটকের গল্প করছে। আমিও মুদ্ধ হয়ে শুনছি। বলতে বলতে হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠল

আমি কিছুই বুঝলামনা

ফোনের রিং বেজে চলেছে ঘরের ভিতরে কিন্তু আমি রিসিভ করতে পারছি না,কারন আমি এখন বাথরুমে গোসল করতেছি।গোসল সেরে বেরিয়ে দেখি আমার গফের ১২টা মিসড কল। তারাতারি কল ব্যাক করলাম। রুহি ফোন রিসিভ করেই ঝারি দেয়া শুরু করলো ও রুহি আমার গফ। রুহিঃওই তুমি ফোন ধরোনা কেন? আমিঃগোসল করতেছিলাম বাবু,সরি। রুহিঃআধা ঘন্টার মধ্যে আমার সাথে পার্কে দেখা করবা। আমিঃআচ্ছা বাবু।তোমার জন্য কি নিয়ে যাবো? রুহিঃকিছুনা। আমিঃআচ্ছা,আমি আসতেছি বাই। রুহিঃবাই। তারাতারি রেডি হয়ে বের হইলাম বাইক নিয়ে।পৌছানোর আগে আমার পরিচয় টা দেই,আমি আসু।খুব ভালো ছেলে নইলে কি আর সেই ক্লাস এইটের গফ নিয়া এখনো থাকি অবশ্য এর পিছনে কারন আছে একটা তা হইলো আমি এসএসসি তে ১ বার এবং এইচএসসি তে ২বার নিষ্ঠার সাথে ফেল করেছি।কিন্তু গফ আমারে ছেরে যায় নাই,আমার সিনিয়র হয়ে গেছে তবে রিলেশন আগের মতই আছে ইনশাআল্লাহ। ওরে আমি খুব ভালবাসি আর ও আমারে খুব ভালবাসে,নইলে কি আর আমার মত ফেল্টুর সাথে রিলেশন করে।চলে আসছি পার্কে পরে বলি আমার কথা। আমিঃবাবু নাও তোমার প্রিয় কিটকাট চকলেট। রুহিঃতুমি কখনো ভুলোনা,তাই তো তোমারে এত্তো ভালবাসি। আমিঃ হে হে হে এইটা কি ভুলা যায় বলো। রুহিঃশুনো,আমি

চশমা

বাসর রাতে এমন একটা কান্ড হবে জীবনেও কল্পনাও করিনি। আমার বর সৌরভ আমাদের বাসর ঘরে না ঢুকে ঢুকেছে তারই বড় ভাবির রুমে। সৌরভ আর ওর বড় ভায়ের রুমটা পাশাপাশি।আর তাদের দুইটা রুম একই ফার্নিচার দিয়ে সাজানো। বড় ভাবি আর ভাইয়া নিচে একটা রুমে ঘুমিয়েছেন।তারা ভেবেছিলেন আজ যেহেতু আমাদের বাসর রাত তাই আমরা যেনো কোনোভাবে বিরক্ত না হয় তার জন্য আমাদের পাশের রুমে আজ আর তারা ঘুমাননি।কিন্ত একি আমি ফুল দিয়ে সাজানো বাসর ঘরে বসে অপেক্ষা করেই আছি আর ও দিকে রাত ১২ টা গড়িয়ে ১ টা , ১টা গড়িয়ে ২ এভাবে প্রায় রাত ৪ টা পর্যন্ত আমি জেগে বসে ছিলাম তার জন্য। তার পর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানিনা। সকালে উঠে দেখি সৌরভ নেই।তারমানে ও গতকাল রাতে এই রুমে আসেনি।আমি কিছুটা অবাক হলাম,তাহলে কী ওর এই বিয়েতে মত ছিলো না? যাই হোক তার থেকে বেশি অবাক হলাম যখন দেখলাম সৌরভ বড় ভাবির রুম থেকে বের হচ্ছে।ওকে দেখে কাঁদো কাঁদো মুখে বললাম, আমি গতকাল সারারাত আপনার জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম, আপনি এলেন না যে? তবে কি আপনার এই বিয়েতে সম্মতি ছিলো না? সৌরভ অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো'কই আমিও তো তোমার জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম তুমিও তো এলেনা,তা

ফেমিনিস্ট

জিনিয়া একজন কট্টর নারীবাদী। শুরুর দিকে শুধু ফেইসবুকে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বিগত চার বছর ধরে সে বেশ কয়েকটা ফেমিনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। সারাদিন বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায়, তার মতে নারীদেরকে পুরুষের সমপর্যায়ে নিয়ে আসতে হলে সবথেকে বেশি মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যেই আমি কয়েকবার খেয়াল করেছি জিনিয়া রাস্তাঘাটে ওপেনলি সিগারেট খায়। চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে যখন সে সিগারেটে টান দেয়, তখন একদম ডন ডন লাগে। এটা দেখে আমার খুশি হওয়া উচিৎ নাকি কষ্ট পাওয়া উচিৎ কিছুক্ষনের জন্য সেটা বুঝে উঠতে পারিনা। নাদান বাচ্চাদের মতো একটা ভাব নিয়ে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। আমি সিগারেট খাইনা অথচ আমার বউ চেইনস্মোকার, এটা ভাবতেই আমার গা শিউরে উঠে। মাঝেমাঝে সাহস করে বলে ফেলি, " জিনিয়া! সিগারেট খেয়োনা, স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। খেলেও বাসার মধ্যে খেয়ো। রাস্তাঘাটে মেয়েদের সিগারেট খাওয়া ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু। " যতোবারই আমি একথা বলেছি, জিনিয়া চট করে রেগে গিয়ে কঠিন গলায় বলেছে, " ছেলেরা রাস্তাঘাটে সিগারেট খেলে কোন সমস্যা নেই। মেয়েরা খেলেই দোষ? তোমরা পুরুষ জাতি তো চাও মেয়েরা সারাজীবন তোমাদের হাতে জিম্মি থাকুক । " আ

এক্সট্রা ভাব

প্রিয়ন্তিকে ফোন দিতেই ও তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো। আমি কোনোকিছু বলার আগেই প্রিয়ন্তি বলে উঠলো। "এতদিন তো আমাকে পাত্তা দিতা না। ফোন দিলেই বলতা আমি নাকি একটা গাধী আর আমার বাচ্চাকাচ্চা যা হবে সব গাধা গাধী হবে তাই আমাকে পাত্তা দাওনি। আর যখন শুনছো আমি গোল্ডেন এপ্লাস পাইছি তখন তোমার দরদ উথলায়া গেছে তাই না? শুনো তোমার মত হাজারটা জাহিদ এখন আমার পিছনে লাইন ধরবে। আর তোমার মত জাহিদ কোনো মেয়ের ভালোবাসা পাবা না এটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। প্রিয়ন্তি ঠুস করে ফোনটা কেটে দিলো। . প্রিয়ন্তির চরম অপমান কিছুতেই সহ্য হচ্ছে না ভেবে অবন্তীকে ফোন দিলাম। যে মেয়েকে কখনো ফোন দিবো না ভেবেছিলাম আজ সে মেয়েকেই ফোন দিলাম। অনেকদিন পর অবন্তীকে ফোন করতেছি কেমন জানি নার্ভাস নার্ভাস লাগতেছে। অবন্তী ফোন রিসিভ করেই বললো। "কী ব্যাপার তুমি আমাকে ফোন দিছো কেনো? অহ আজ আমার ভালো ঘরে বিয়ে হইছে বলে সহ্য হচ্ছে না? বিয়ের আগে হাজারবার বলছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে পাত্তা দাওনি আজ যখন ভালো ঘরে বিয়ে হইছে শুনছো তখন মাঝখানে প্যাচ লাগাতে আসছো তাই না? তোমার মত ছেলেরা এমনই হয়। প্রথমে সোনাকে তামা ভেবেছিলা আজ বুঝতেছো আমি আসল সোনা। তারপ

এটেন্ডেন্স সমাচার

ছোট থেকেই ঢাকা শহর নিয়ে খুব ভয়ানক রকমের আগ্রহ কাজ করে আমার। ঢাকার কোথায় কোন খাবার পাওয়া যায়, কোন গলি কোথায় গিয়ে উঠেছে, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে হলে কোন গলিতে ঢুকলে কিভাবে কম সময়ে, কম টাকায় এবং কম জ্যামে যাওয়া যাবে এসব জ্ঞান অর্জন করার একটা মারাত্মক ড্রাইভ কাজ করে নিজের ভিতর। কলেজে উঠে আর সবার মত আমারও নতুন নতুন পাখা গজায়। স্কুলে থাকতে সম্ভব না হলেও কলেজে উঠে কিছুটা স্বাধীনতাও পাই আর পকেটেও কিছু মালপানি থাকত তখন। এই দুইয়ের মিলনে এই শখ তখন নেশা হয়ে যায় একরকম। প্রায়ই কলেজ বান্ক দিয়ে ঢাকার রাস্তায়-রাস্তায় হাঁটতাম। রাস্তা ঘাট চিনার চেষ্টা করতাম হেটে হেটে, পকেটে টাকা থাকলে হোটেলে গিয়ে খেতাম আর না হলে কোন একটা রোডের ব্রীজে উঠে মানুষ দেখতাম। কি যে ভালো লাগত! কিন্তু এই আনন্দের ভিতর বাধ সাধত কলেজের এটেন্ডেন্স সিস্টেম। ৮৫% থাকা লাগবে। তাই জহরলাল স্যারের দেওয়া অংকের জ্ঞান কাজে লাগাতাম। হিসাব করতাম কবে কয়টা ক্লাস মিস দিলে এটেন্ডেন্স একদম ৮৫%ই থাকবে আবার ল্যাব,কুইজ এসব নিয়ে বড় কোন প্যারাও খাওয়া লাগবে না। এভাবেই আনন্দে ঘুরেফিরে দিন কাটতো আমার। আম্মুর অফিস ছিল মতিঝিল, বিমান অফিসের পিছনে। আম্মুর

লুঙ্গি

মায়ের সাথে আজকে বড় ভাই গেছিল পাশের বাসার এক আন্টির বাসায় ।আন্টির ছোট ছেলের বার্থডে ছিল। অনেক বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বার্থডে সেলিব্রেশনের জন্য। আমি যেতে চাইছিলাম কিন্তু বাবা বাসার বাইরে কাজে গেছে,বাসায় একজনকে থাকতে হবে ।কি আর করার, আমি একটু ছোট তাই আমাকে রেখে গেল। যাওয়ার আগে ভাইয়ার প্রস্তুতি দেখে আমি হতবাক । যাইহোক বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খানের মত নিজেকে তৈরি করে আনছিল জেন্টস পার্লারে গিয়ে ।খুব উৎসাহ নিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে বাসায় আসার পর ভাইয়ার চেহারা পাকা লঙ্কার মত করে রাখছে।ডিম নিয়ে বসে থাকা মুরগির মত ফোঁস ফোঁস করছে। আমি কিছুই বুঝলাম না।বার বার জিজ্ঞাস করছি ভাইয়া তোমার কি হয়েছে বল? ভাইয়া নিশ্চুপ ।এমন ভাবে চেয়ে আছে আমার দিকে, যেন যে কোন মুহূর্তে বোমা বিষ্ফোরনের মত বিষ্ফোরিত হয়ে যাবে। বুঝলাম সময় এখন সুবিধার না।মায়ের রুমে গিয়ে দেখলাম আম্মা ঘুমিয়ে পড়েছে।যাক মাকে আর জাগিয়ে তুললাম না। চুপচাপ ভাইয়ার পাশে গিয়ে বসলাম।একটু পরে কে যেন ফোন করল,ভাইয়া ফোনটা নিয়ে সোজা বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। আমিও দরজায় গিয়ে কান পাতলাম। ভাইয়ার কথা গুলি এমন ছিল:- (আরে সোহা

কথোপকথন

- বাজারে যাচ্ছেন? - হুম। - নিন,ধরুন। - কি এটা? - বাজারের লিস্ট। - আপনার বাসার বাজার আমি কেন করতে যাবো? - কারণ আমি আপনার প্রতিবেশী তাই। তাছাড়া আব্বু কিছুদিনের জন্য ঢাকার বাইরে গেছেন। - তো? - তো মানে? প্রতিবেশীর দেখাশোনা করা আপনার দায়িত্ব না? - প্রতিবেশী যদি প্রতিবেশীর জায়গায় থাকে তাহলেই দায়িত্বের কথা আসে। কিন্তু আমার প্রতিবেশী তো প্রতিবেশী না,যেন গলার ফাঁসি! - দেখুন,এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। - ওহ্,বাড়াবাড়ি বলে যে কিছু আছে,আপনি এটা বুঝেন তাহলে? - আপনি সবসময় আমার সাথে এভাবে কথা বলেন কেন? - আপনার সাথে আপনার মত করে কথা বলতে হলে আমাকে জেন্ডার চেঞ্জ করতে হবে। করবো? - অনেক হয়েছে। লিস্টটা ধরুন আর তাড়াতাড়ি বাজার করে নিয়ে আসুন। - পারবো না। - ঠিক আছে,আমিও তাহলে আর পেটের ভেতর কথা চেপে রাখতে পারবো না। - মানে? - মানে খুব সোজা। অফিস থেকে এসে বাসায় না গিয়ে,ছাদে বসে বসে যে একটার পর একটা সিগারেট টানা হয়,এই খবরটা এখন আমার পেট থেকে আন্টির কানে পৌঁছে দেয়ার সময় এসেছে। এভাবে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। - বাজারের লিস্টটা দিন। - নিন। - আচ্ছা আমি থাকি দোতলায় আর আপনি থাকেন চারতলায়। আপনি কিভাবে আমার

শৈশব

টেবিলে খেতে বসেছি৷ বাবা কখন পিছনে এসে দাড়িয়েছে সে খেয়ালের বালাই নেই। আমি টপাটপ গিলে চলেছি। পিছনে চোখ পরতেই গিলার স্পিড আশি পার আওয়ার থেকে শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে নিলাম। ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম; কি হইছে! এমনে চোখ বড়বড় করে তাকাই রইছো ক্যান? বাবা ভনিতার স্বরে টেনে টেনে বললো; আহা বাজান তুমি খাওন বন্ধ করলা ক্যান? খাও খাও আমি চোখ জুড়াইয়া তোমার খাওন দেখি। ইস কতো সুন্দর কইরা নিশ্চিন্তে আমার অকর্মা পোলাডা বইসা বইসা গিলছে তো গিলেই চলছে। গিলে গিলে আমায় ধ্বংস করতাছে। দেইখা-ই আমার চোখ জুড়াই যাইতাছে... তাৎক্ষণিক আমি খাবার প্লেট হাতে নিয়ে খটাস করে দাঁড়িয়ে গিলার স্পিড নব্বইতে উঠিয়ে বললাম; নেও হইছে! বইসা খাইলে তো তোমার চোখের উপর ঠাডা পরে, এইযে এহন খাড়াই খাড়াই খাইতাছি, হইছে এইবার শান্তি? বাপে চোখ গরম করে বিড়বিড় করতে করতে চলে গেলো.... ৪র্থ শ্রেনীতে উঠেছি তখন। এক রাত্রিবেলা বাবা আমায় টেনে এনে তার পাশে বসালো। মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে গলায় বললো; শোন বাজান জীবনে তোরে আমার চেয়েও বড় হইতে হইবো বুচ্ছোস? বাবা সাধারত আমার সাথে এতো নমনীয় হয়ে কথা বলে না। সব সময় দৌড়ানির উপরেই রাখে। মা'কে নালিশের গোডাউন বানিয়ে ফেলে;

নিম পাতা

সকাল সকাল ভার্সিটি তে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি। আমাকে দেখতে সাধারণ ছেলের মতো মনে হলেও সকলের কাছে নাকি আমি কবির মতো। এইতো সকাল বেলা অতিথি ছোট বোনের কাছে একটা চিঠি রেখে গেল। অনু আমার কোনো কিছুতেই হাত দেয় না। মানিব্যাগে হাত দেয় না। কোনো খাবারে হাত দেয় না। বলতে গেলে একদম ভালো স্বভাবের মেয়ে। অনু এসে বলল " ভাইয়া আসার সময় আমার জন্য আচার নিয়ে আসবে। " কিছু বললাম না। একটা টমটমে উঠতেই অতিথি কে দেখতে পেলাম। অতিথি আমার দিকে বেশ আগ্রহ নিয়ে চেয়ে আছে। অতিথি মন খারাপ করে বলল " চিঠি টা কি পড়ে ছিলেন ? " কোনো কথা বলি নি। ভয় করছিল। টমটমে অতিথি সহ আর দু'জন ছিল। অতিথি কে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই। তবে অতিথির আবেগ টা কে ভয় পেতে হয়। আবেগের কারণে হয়তো অতিথি আমাকে মারতেও পারে। ভালবাসতে কারণ লাগে না। তবে অতিথির মধ্যে কোনো কারণ খুঁজে পাই নি। সহসা সুরেলা কন্ঠে মেয়েটা হাসি দিয়ে উঠল। বেশ অবাক হলাম। এখানে হাসি দেওয়ার কি হলো। অতিথির দিকে চাইতেই দেখলাম রাস্তার পাশে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল তাকে দেখে হাসি দিয়েছিল। দু'জন আবার খুব চুপ করে বসে আছি। অতিথি আমাকে বলল " মনে মনে কি বকছেন? " এ কথায় খ

কয়েকটা সাইকোলজিক্যাল হ্যাক দেখে নিন।

১. নার্ভাসনেসের সময় চুইংগাম চিবাতে পারেন। - সাইকোলজিস্ট রায়ান এন্ডারসনের মতে,নার্ভাস থাকলে আমাদের মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করে না।তখন আপনি চুইংগাম চিবিয়ে মস্তিষ্ককে বোকা বানাতে পারেন।এতে ব্রেইন মনে করবে আপনি নার্ভাস নয় কারণ অলরেডি কাজ করছেন( চুইংগাম চিবানো)।এভাবে নার্ভাস অবস্থায় ও মস্তিষ্ককে বার্তা দিতে পারছেন যে আপনি শান্ত আছেন। ২.দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়ার সময় সঙ্গীর পায়ের পাতার দিকে নজর রাখুন। - যার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন তার পায়ের আঙ্গুল যদি আপনার দিকে নির্দেশ করা থাকে তাহলে বুঝবেন সে আপনার কথায় মনোযোগী। যদি তার পায়ের আঙ্গুল অন্যদিকে মুখ করা থাকে বুঝবেন সে আলাপে আগ্রহী নয়। তার মনোযোগ অন্য কোথাও... ৩.সঙ্গীর রাগ এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে তার মুখ বরাবর বসে পড়ুন - এটা অদ্ভুত শোনালেও সাইকোলজিক্যালি প্রমাণিত এক্সপেরিমেন্ট। যখন আপনি রাগান্বিত ব্যক্তির মুখ বরাবর বসে পড়বেন ঘটনার আকস্মিকতায় সে অবাক হবে এবং আপনার নৈকট্য তার রাগকে নিমিষেই কমিয়ে দেবে। ৪.একদল লোকের কাছে সাহায্য না চেয়ে একজনের নিকট সাহায্য চাইবেন। - যখন আপনি কয়েকজনের সামনে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করবেন সেটা ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না।কারণ অনেকজন থাকায় তার

ওরে বাটপার

প্রচন্ড গরমে মেজাজটা এমনিতেই খারাপ হয়েছিল, তার ওপরে আবার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির ফোনালাপ শুনে মেজাজটা আরো বিগড়ে যাচ্ছিল। ছেলেটি ফোনে বলছিলো... –না জান আমি তা বলিনি, প্লিজ বেবি রাগ করেনা। বললাম তো সরি। তুমি আমার কিউট বেবিনা, প্লিজ প্লিজ এমন করোনা।আর এমন হবেনা। প্রতিদিনের মতো আমি কলেজ থেকে বাসে করে ফিরবো । বাসে উঠেই ফাঁকা একটি সিটে বসে পরেছিলাম। বাস ছাড়ার অপেক্ষায় আছি। যখন বাসে উঠেছিলাম তখন অনেকগুলো সিট ফাঁকা ছিল। ৩/৪ মিনিটেই মানুষের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ। সিট তো ফাঁকা নেই এখন উল্টে বাসের রড ধরে দাঁড়িয়ে পরলো অনেকেই। এই প্রচন্ড গরমেও বাসের হেল্পার ছেলেটা চেচিয়ে চেচিয়ে বলছে... –দুই মিনিট আছে মাত্র আর তারাতাড়ি উঠুন। আসুন আসুন... শিক খালি, শিক খালি আছে। একটা মধ্যবয়সী লোক বাসে উঠেই হেল্পার ছেলেটির সাথে ঝামেলা বাঁধিয়ে দিল। – এই ছোকরা কই সিট খালি? চিল্লাইয়া চিল্লাইয়া বলছিস সিট খালি! কোথায় ফাঁকা সিট দেখা! –কাকু আপনি ভুল শুনছেন আমি কইছি শিক খালি। শিক ধইরা দাঁড়াইয়া যাইতে পারবেন। মধ্যবয়সী লোকটা রেগেমেগে নেমে গেল। আমি মনে মনে বললাম, ওরে বাটপাড়! আমার ঘারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির ফোনালাপ এখনো চলছেই

বিহাইন্ড দ্যা সিন

- আচ্ছা আজ কি রঙের শাড়ি পরবো? - আগে বলো আমি কি রঙের পাঞ্জাবী পরবো। - উঁহু, শাড়ির রঙটা বলো না আগে। - তোমার ব্যাকলেস ব্লাউজ আছে? - কেন? উদ্দেশ্য কি শুনি? - উদ্দেশ্য কিছু সুবিধার না, তা তুমি ভালো করেই বুঝতে পারছো জানি৷ আছে ব্যাকলেস ব্লাউজ? - আছে। - তাহলে চকলেট কালার শাড়ি পরো। - মেরুন চলবে? - আচ্ছা আমরা শাড়ি নিয়ে আলোচনা করে সময় নষ্ট করছি কেন! একটা সময় পর না তোমার গায়ে শাড়ি থাকবে আর না থাকবে আমার গায়ে পাঞ্জাবি। - ছিঃ, আবার শুরু করলে? - আমি গরমের কথা ভেবে বললাম। তাছাড়া তুমি আমি কেউই শাড়ি এবং পাঞ্জাবিতে অভ্যস্ত না। - ওহ্, স্যরি। - হয়েছেটা কি বলো তো? - আসলে আমি খুব এক্সাইটেড৷ কতদিন পর তোমাকে দেখবো বলো তো৷ - একই কথা তো আমিও বলতে পারি। দেশে আসার পর সবার প্রথমে তোমার সাথে মিট করবো বলে আমার আসার খবরটা কাউকে জানাই নি এখনো। - কি রান্না করবো বললে না কিন্তু। - ফ্রিজে চিংড়ি মাছ আছে? - তোমার আসার খবর পেয়ে চিংড়ি আর শুঁটকি তখনি আনিয়ে রেখেছি। - ব্যস্, এতেই চলবে৷ আবার দেখো, রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়িয়ে বসে থেকো না যেন। পরে দেখা যাবে, রোমান্সের বদলে ডাক্তারি করতে হচ্ছে আমাকে। - ইশ্, আমি আর আগের মত বেখেয়ালি থ