বিয়ের দিন বউ এর বড় বোন কে দেখে রীতিমত বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম,
বিয়ের দিন বউ এর বড় বোন কে দেখে রীতিমত বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম, এতো আমারই প্রাক্তন।
স্কুলে পড়াকালীন সময়ে লিলির সাথে ২ বছর সম্পর্ক ছিলো, কিন্তু ছাত্রজীবনেই তার বিয়ে হয়ে যায়।
এর পর আর যোগাযোগ হয়নি।
এত বছর পর এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি।
না পারলাম কাউকে কিছু বলতে, না পারছিলাম সহ্য করতে, ইচ্ছে করছিলো বিয়ের আসর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।
কিন্তু তা আর হলো না। বিয়েটা হয়েই গেলো।
বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে টা করেই ফেললাম, কিন্তু কে জানতো এমন একটা বিব্রতকর পরিবেশে পরতে হবে।
বিয়ে করে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরছি, আর চিন্তা করছি।
বউকে কি সব আগেই বলে দিবো, নাকি গোপন রাখবো বুঝতেই পারছি না।
অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম, যাকে নিয়ে জীবন পার করবো তার কাছে এতো বড় সত্যি গোপন করা ঠিক হবে না।
কিন্তু বলে দিলে যদি দুই বোনের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়।
বিয়েটা পারিবারিক ভাবে হওয়াতে বিয়ের আগে আমার বউ মানে মিলির সাথে ভালোভাবে কথা বলারও সুযোগ হয়ে উঠেনি।
আর সত্যি বলতে মেয়েটা এতো বেশিই সুন্দর এতো বেশি মায়াবতী যে আমি প্রথম দেখেই আর না বলতে পারিনি।
মিলিকে আমার ঘরে রেখে গেলো , আমি রীতিমতো ঘামতে শুরু করলাম।
কিছু বলার আগেই মিলি আমাকে বলে উঠলো
- আবির সাহেব এই দিকে আসুন কথা আছে।
আমি চুপচাপ গেলাম
- আবির সাহেব আপনি আজ থেকে আমার বর, আমি আপনার স্ত্রী। আজ থেকে আমাকে জীবন সঙ্গীর পাশাপাশি ভালো বন্ধু ভাববেন।
- ঠিকাছে।
- আচ্ছা আপনি কি কথা কম বলেন, আমার কিন্তু কথা বলতে বেশ ভালো লাগে।
- আসলে মিলি আমি কিছু বলতে চাই
- জানি কি বলবেন, বিয়ের আগে প্রেম ছিলো এক্স ছিলো, এসব তো।
- হুম
- ওসব বলতে হবে না সব বাদ, আজ থেকে আমিই আপনার সব।
বুঝলেন?
- হুম, কিন্তু
- একদম চুপ, অতীত বাদ
আমিই বর্তমান আমিই ভবিষ্যত।
বউ এর বকবকের চোটে আর কিছুই বলতে পারলাম না।
এদিকে বিয়ের পরদিন শ্বশুড় বাড়ি যেতেই লিলি আমাকে ঘাপটি মেরে ধরলো।
- শালা আমারে না পাইয়া শোধ নেবার জন্য আমমার বইন রে বিয়ে করছিস।
- এসব কি বলো, আমি জানতাম না ও যে তোমার বোন।
- আমার বোনরে কষ্ট দিলে তোর কপালে খারাপ আছে।
- আচ্ছা আপা
- আপা বললি কেন
- বউ এর বড় বোনরে কি ডাকবো
- মশকরা করবি না, বাসার সবাই জানে তুই আর আমি যে একই স্কুলে একই ক্লাসে ছিলাম।
- জানলো কিভাবে
- আমি জানাইছি
- আল্লাহ প্রেমের কথাও বলে দিছো নাকি
- না ঐটা বলিনাই, তবে বেশি সেয়ানা গিরি করলে বইলা দিবো
- সংসারটা যেনো টিকে দোয়া কইরেন
ঐদিন যে শ্বশুড় বাড়ি থেকে আসছি আর যাই নাই।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম বউ রে এমন ভালোবাসবো আর সুখি রাখবো যে লিলি দেখবে আর জ্বলবে আর আফসোস করবে।
যেই প্রতিজ্ঞা সেই কাজ।
আজ বিয়ের ৩ বছর হলো, ঘর আলো করে ফুটফুটে এক রাজকন্যা এলো।
৩ জন অনেক ভালো আছি আল্লাহর রহমতে।
বউকে আমি সবই বলে দিছিলাম, বউ আমার এতো সহজে মেনে নিবে ভাবিনি।
কিন্তু সমস্যা হলো ঝগড়া হলেই ক্ষেপানোর জন্য বলে বর না হয়ে দুলাভাই হলেই ভালো করতে!
কথা শুনে ভ্যাবলা কান্তের মতো চেয়েই থাকি।
লেখাঃ সিনথিয়া অরয়া