আহাম্মক

 যাত্রাবাড়ী থেকে লোকাল বাসে উঠে উত্তরা যাচ্ছি। একটা মেয়েকে বেশ পছন্দ হয়েছে তাই মোবাইল বের করে চুরি করে দু একটা ছবি তোলার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু একটু পরে তার পাশের সিটে একটা মহিলা উঠে বসাতেই আমি আর তাকে ভালো করে দেখতে পেলাম না। 


আমার পাশেও একটা আঙ্কেল বসে আছে, আর মেয়েটার পাশে এক আন্টি। মনে মনে ভাবলাম এরা দুজন যদি একসঙ্গে বসতো তাহলে আমি আর মেয়েটা একসঙ্গে বসতে পারতাম। 


জেগে জেগে স্বপ্ন দেখে লাভ কি? মনকে সেই সান্তনা দিয়ে বসে আছি, প্রচুর জ্যামে আটকা পড়ে গেছে গাড়ি। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সামান্য আধা কিলোমিটার রাস্তা যেতে পারলাম না। 


বাড়ি থেকে ভোরবেলা রওনা দিয়েছি তাই চোখে ঘুম টলমল করছে। কানে ইয়ারফোন গুঁজে দিয়ে তন্দ্রা লেগে গেল। কড়া ব্রেক কষলো ড্রাইভার, ঘুম ভেঙ্গে গেছে আমার। তাকিয়ে দেখি আমরা এখন রামপুরা চলে এসেছি। 


হঠাৎ করে পাশের সিটে সেই মেয়েটাকে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে গেলাম। মেয়েটা আমার পাশে কখন এলো? হায় আল্লাহ। 


- রাতে কি চুরি করছেন? বাসের মধ্যে এভাবে কেউ ঘুমায় নাকি? 


- ছি ছি চুরি করবো কেন? আমার দাদা গতবছর হজ্জ করে এসেছে। আমি কোনো অন্যায় করতে পারি নাকি? 


- বাসের মধ্যে মেয়েদের ছবি লুকিয়ে লুকিয়ে তোলা কি ন্যায় নাকি অন্যায়? 


- ইয়ে মানে ইয়ে। 


- এরপর যদি আর কারো ছবি তুলেন তাহলে ক্যামেরার ফ্ল্যাশলাইট বন্ধ করে নিবেন। আহাম্মক। 


- জ্বি আচ্ছা। 


- এবার বলেন এভাবে ছবি তোলার কারণ কি? 


- এমনিতেই। 


- কাচুমাচু করছেন কেন? লজ্জা করে নাকি? 


- আপনি অনেক সুন্দর, বিশেষ করে আপনার চুল গুলো বেশি সুন্দর। আর আগে তো চোখের দিকে তাকিয়ে দেখিনি, এখন সামনে থেকে চোখ দেখে আরও মায়াবী লাগছে। 


- আপনার কি মন হয় আমাকে দেখে যেকোনো ছেলে প্রেমে পড়ে যাবে? 


- ১০০% কোনো সন্দেহ নাই। 


- আপনার মোবাইলটা দেন। 


আমি বাধ্য ছেলের মতো মোবাইলটা তার হাতে দিয়ে দিলাম। মেয়েটা একটা নাম্বার তুলে আমার হাতে দিয়ে বললো, 


- সেভ করুন। 


- কি নাম দিয়ে সেভ করবো? 


- সজীব। 


- মেয়ে মানুষের নাম সজীব হয় নাকি? 


- আপনাকে কখন বললাম যে এটা মেয়ে মানুষের নাম্বার? 


- তাহলে কার নাম্বার? 


- আমাকে বয়ফ্রেন্ডের। 


- আ্যা...? 


- হ্যাঁ, সারাক্ষণ শুধু বলে ও ছাড়া আর কোনো ছেলে নাকি আমাকে পাত্তা দেবে না। তাই আপনি ওর নাম্বারে কল দিয়ে এতক্ষণ যা যা বললেন সবকিছু বলবেন। তাকে বলবেন যে আমার দিকে বাসের মধ্যে আপনি কীভাবে ক্রাশ খেয়েছেন। 


- তাহলে আমার কি হবে? 


- আপনার যে কয় টাকা খরচ হবে সেটা আমি আপনাকে দিয়ে দেবো। 


বাস ততক্ষণে নতুন বাজার এসে গেছে। মেয়েটা সিট থেকে উঠে গেল, আমি সত্যি সত্যি আহাম্মক এর মতো তাকিয়ে রইলাম।। 


#সমাপ্ত 


লেখালেখি করার এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই বারোটা থেকে যাত্রাবাড়ী জ্যামে আটকা পড়ে আছি, আর বাসের মধ্যে বসেই এমন চিন্তা এলো। কিছু একটা চোখের সামনে দেখলেই সেটা নিয়ে কল্পনা করে গল্প বানাতে ইচ্ছে করে। তাই বাসের মধ্যে বসে বসে লিখে ফেললাম।


বিঃদ্রঃ- বাসের মধ্যে বসে বসে থ্রিলার গল্প লেখা যায় না তাই কেউ এক কাপ ঠান্ডা কফির অর্ডার করে লজ্জা দিবেন না। 




লেখাঃ- মোঃ সাইফুল ইসলাম।


Popular posts from this blog

₪ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম [post no:-22]

হ্যাপি কাপল

₪ ছেলেটি মেয়েটাকে অনেক ভালোবসতো [post no:-18]

বড় বোন থাকার ১৫টি মজার দিক

₪ বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় [post no:-16]

মাইকেল জ্যাকসন 150 বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন

অবহেলা

₪ ছোট বোনের থেকে টাকা ধার [post no:-27]

ডিপ্রেশন

এক চালাক ব্যক্তি [ post no: 11 ]