চাওয়া
পাউরুটিতে জেলি মাখতে মাখতে বড়ভাই রুহান জিজ্ঞেস করলেন,
-আজকে আল্লাহর কাছে কি চাইলি?
রাশেদ খুব সহজ ভঙ্গিতে বলল,
-আমি ঠিক করেছি আজকে থেকে আর আল্লাহর কাছে কিছু চাইবো না।
রুহান জেলি মাখানো বাদ দিয়ে রাশেদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। এরপর পাউরুটিতে এক বাইট দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
-তা তোর এই মহৎ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য টা জানতে পারি?
-হ্যা, আমি চাইলেও তো আল্লাহ সেটা দেয় না। তাহলে চেয়ে কি লাভ?
-আচ্ছা, তুই কি আল্লাহর কাছে এটা চেয়েছিলি তোর হাত পা ঠিকঠাক থাকুক, চোখের দৃষ্টি থাকুক?
-না, চাওয়ার কি হলো? এটা তো এমনিতেই পেয়ে গেছি।
-বাবা মা তোকে এত যত্ন নিয়ে বড় করুক, কিংবা এইযে অক্সিজেন নিচ্ছিস সেটা চেয়েছিলি?
-না।
-এই যে খাবার টা খাচ্ছিস সেটাও কি আলাদা করে চেয়েছিলি?
রাশেদ এবার ভাইয়ের দিকে তাকাল। রুহান আবার বলল,
-এমন অনেক কিছুই আছে যেটা তুই চাস নি অথচ আল্লাহ তোকে দিয়েছে। আর মোনাজাতে আল্লাহর কাছে যা ই চাস না কেন সেটা বিফলে যায় না।
-কীভাবে? আমি তো আল্লাহর কাছে চাইলাম আমার চাকরিটা যেন হয়ে যায়। সেটা তো হলো না।
রুহান এবার একটু হেসে বললেন,
-সেই সাথে তোর খুব বড় একটা এক্সিডেন্ট হতে নিয়েছিল সেটাও কিন্তু হয় নি। তুই যা কিছু চাইবি এগুলি যদি দুনিয়াতে পূরণ নাও হয়, আখিরাতে সেগুলোর অনেক গুণ তুই ফিরে পাবি। আল্লাহ কাউকে খালি হাতে ফেরান না। বুঝলি?
রাশেদ এবার কিছুটা থতমত খেয়ে বলল,
-তুমি আল্লাহর কাছে কি চেয়েছো?
(সমাপ্ত)
লেখাঃ অরণী মেঘ