বাপ বেটার বাজি

ইদানিং আমি একটু বেশিই খাই। বাপ বেটা দুজনে বসে আছি খাবার টেবিলের সামনে। মা একটা গামলায় করে ভাত বেড়েছে ঠান্ডা করতে। প্রায় এক কেজি পরিমাণ চালের মত হবে। তবে পুরোপুরি না। বাপে বললো; আয় বাজি লাগবি?

বললাম; কিসের বাজি? বাপে বললো; এই ভাতগুলা যদি খেতে পারিস তবে ১ হাজার টাকা দিবো। আর না পারলে তুই দিবি। রাজি?

আমি গামলায় বারা ভাতের দিকে তাকালাম। খেতে একটু কষ্ট হবে, তবে অসম্ভব না। সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলাম। বললাম; ওকে আসো বাজি...

বাপে ও সাথে সাথে গামলা ধরে সামনে দিলো। সাথে তরকারি আমার প্রিয় পাবদা মাছ ভুনা আর আলুর সাথে ডিম সিদ্ধ করে করা ঝোল। আমিও বিসমিল্লাহ্‌ বলে বসে গেলাম গামলা নিয়ে। ধিরে সুস্থে শুরু করলাম খাওয়া...

আস্তে আস্তে গামলার ভাত কমতে লাগলো। পানি পিপাসা লাগলেও একটু করে শুধু গলা ভিজিয়ে নিচ্ছি। পানি বেশি খেলে পেটের জায়গায় কম পড়বে তাই এই ব্যবস্থা। শেষের দিকে বুঝলাম অল্প কিছু ভাত খুব প্যাঁড়া দিবে। দিতেও লাগলো। তবুও হাল ছাড়লাম না। খেয়ে উঠে গেলাম। দেখি পেট নিয়ে নড়তেই কষ্ট হচ্ছে। মা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাঁঁকিয়ে আছে। বাপে সেম অবস্থা। বললাম; তাকাই থাইকা লাভ নাই টেকা দেও....

বাপে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বিড়ালের মত চলে যেতে ধরলো। আমি পিছন থেকে গেঞ্জি টেনে ধরলাম; টেকা না দিয়া কই যাও চান্দু? টেকা দেও...বাপে বললো; কিয়ের টেকা? আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম; কিয়ের টেকা মানে? বাজি ধরলা যে এক হাজার! ঐটা কই যাইবো?

মা পাশে থেকে হাঁসছে। বাপে বললো; ভাত খাইছে কে? ভ্রু কুঁচকে বললাম; ক্যান! আমি...

"উপকার কার হইছে? আমার না তোর?

বুঝে গেলাম তার কথায় বাপে চোখ পল্টি নিয়ে ফেলছে। মায়েরে বললাম; মা উনারে টেকা দিতে কও কিন্তু। মায়ে তখনো হাঁসছে। হাঁসতে হাঁসতে বললো; তোগো বাপ বেটার ভিতরে আমারে টানিস ক্যান? তোরাই বোঝ....

আমি কিছু বলার আগেই মায়ের উদ্দেশ্যে বাপে বললো; আইচ্ছা তুমিই কও। ভাত খাইছে ও। পেট ভরছে ওর। উপকারর হইছে ওর। সবই ওর হইছে। তাইলে আমি ওরে আবার কিয়ের টেকা দিমু?

আমি বললাম; বাজান কামডা কিন্তু ভালা করলা না। এইদিন কিন্তু দিন না সামনে কিন্তু আরো দিন আছে। দেইখা নিমু....

বাপে ফকলা হাঁসির মাধ্যমে ঝাড়ি দিলো; আমার ভাতও খাইছোস আবার টেকাও চাস! যা ফোট বেটা....

না পারছি কিছু বলতে। না পারছি সইতে। বাপ বলে কথা। অতি কষ্টে নিজেকে তাই সামাল দিয়ে রুমে এসে পেট উপর দিকে দিয়ে ভুট হয়ে শুয়ে আছি। নড়তে পারছিনা। তবে মনে মনে সামনের দিন গুণছি আর দাঁতে দাঁত কামড়াচ্ছি; সুযোগ পাইয়া লই বাজান। মজা বুজামু খাড়াও.....


লেখাঃ Arnob

Popular posts from this blog

₪ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম [post no:-22]

হ্যাপি কাপল

₪ ছেলেটি মেয়েটাকে অনেক ভালোবসতো [post no:-18]

বড় বোন থাকার ১৫টি মজার দিক

₪ বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় [post no:-16]

মাইকেল জ্যাকসন 150 বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন

রিয়্যাক্টর কিং

একটি মেয়ের গল্প

অবহেলা

₪ ছোট বোনের থেকে টাকা ধার [post no:-27]