চব্বিশ ঘন্টার অভিমান


গত কালকে মালিহা আমাকে একটা ফেইসবুক আইডির স্কিনশট দিয়ে জিঙ্গেস করলো আইডিটা কার? জবাবে আমি বললাম আমার এক ছোট ভাইয়ের। আইডিটা হলো আমার এলাকার এক ছোট ভাইয়ের। সে ছোট ভাই প্রোফাইলটা আমার প্রোফাইলের মতো করে সাজিয়েছে। মালিহা আমার কথা বিশ্বাস করছে না। আমাকে বলে বসলো এটা আপনার ফেইক আইডি। মালিহার কথা শুনে আমি যেন আসমান থেকে পড়লাম। মালিহার কথা শুনে আমার মেজাজ চারশত বিশ।।

মালিহার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ফেইসবুকে। এরপর অনেক কথা বলেছি আমরা। একদিন মালিহা আমার জীবন কাহিনী শুনতে চাইলো। আমিও বললাম। আমার জীবন নামক গল্পটা মালিহার কাছে দুঃখে কষ্টে ভরা। এরপর থেকে অনেক আপন হয়ে যাই আমরা। একটা সময় আমার ভালো লাগতে শুরু করে মালিহাকে। একদিন কথা না বললে যেন দিনটাই অপূর্ন থেকে যায়। মালিহা দেখতে ভিষন সুন্দর। চোখ দু'টি মায়াবী। ঠোঁটে সবসময় লেগেই থাকে মুচকি হাসি। আমি আর পারছি না। একদিন বলেই ফেললাম মালিহা আমি তোমায় ভালোবাসি। মালিহা আমার কথা শুনে কিছুখন পর উত্তর দিলো ওর বয়ফ্রেড আছে। আমিও জবাবে বললাম তবুও ভালোবাসি। ভালোবাসলেই পেতে হয় বিশ্বাস করি না।
সেদিন থেকে মুনাজাতে চাইতাম মালিহাকে। হটাৎ করি ফেইসবুক থেকে হারিয়ে যায় মালিহা।।

প্রায় দু'মাস পর একদিন মালিহার কল আসে। কিছু সমস্যার জন্য ফেইসবুক ছেড়ে দিয়েছে মালিহা। ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছে মালিহার। আমি মালিহাকে গ্রহন করতে চাইলাম তবে মালিহা আমাকে ফিরিয়ে দিলো। তবুও কথা বলতাম আমরা। রোজ কথা বলতাম। কথা বলা যেন অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছে। আমি মাঝে মাঝে নিজেকে সামলাতে না পেরে বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি মালিহা। তবে আমি যতবার বলেছি মালিহা ততবার ফিরিয়ে দিয়েছে। তবুও আমার রাগ নেই মালিহার উপর। মালিহার প্রতি আমার ভালোবাসা বিন্দু মাত্রও কমেনি।।

ইদানিং মালিহা আর আমি আগের থেকেও বেশি কথা বলি। তবে আমাদের মধ্যে কোন রিলেশন নেই। সেতিন হটাৎ ঐ স্কিনশট দিয়ে বসলো মালিহা। আর আমারও মেজাজ চারশত বিশ। মালিহা আমাকে বিশ্বাস করেনি এই কথা ভেবেই আমার অনেক রাগ হয়েছে। রেগে বললাম।

"মেজাজ টা খারাপ করে দিয়েছেন! কথা বলতেই ইচ্ছে করছে না"

আমার এই কথা শুনে মালিহা রেগে গেলো। মূহর্তে বলে বসলো আমার সাথে কথা বলতে হবে না। কোন কথা নাই আপনার সাথে। আর মেসেজ দিবেন না।

কথাগুলো বলেই অফলাইন হয়ে গেলো মালিহা। আমি ফোন করে অনলাইনে আসতে বললাম জবাবে মালিহা বললো পারবে না। কোন কথা নেই আমার সাথে তার। আমিও রেগে ফোন কেটে দিলাম। তখন সময় বিকেল চারটা বাজে। তবে আমিও রাগ করে থাকতে পারলাম না। আবারও কল ফোন করলাম মালিহাকে। মালিহার ঐ এক কথা। আমার আবারও রাগ হলো রেগে ফোন কেটে মেসেজ করলাম আর কোন দিন আপনাকে মেসেজ করবো না। মালিহা কোন উত্তর দিলো না।।

রাত দশটায় ফেইসবুক আইডি লগইন করতেই দেখি মালিহা অনলাইনে। রাগ ছেড়ে মেসেজ করলাম। মালিহা জবাব দিলো "কইসি না আপনার লগে কথা নাই" জবাবে আমি বললাম এখন কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। মালিহা আরও রেগে গেলো।। আমি যতই স্বাভাবিক হয়ে কথা বলতে চাচ্ছি পরিস্থিতি ততটাই দূরে ঠেলে দিচ্ছে। আমিও যেমন রাগী মালিহাও তার থেকে কম নয়।।
- আপনি কথা বলবেন না এটাই আপনার শেষ কথা (আমি)
- হুম বলবো না। ( মালিহা)
- এখন কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে! আপনি বার বার না করার পরেও আমি নিরলজ্জের মতো মেসেজ করছি।।
- কে বলছে মেসেজ করতে?
- এই কথাটা বলতে পারলেন? আচ্ছা ঠিক আছে আজকের পর আর আগে মেসেজ দিবো না আপনাকে। আমার জন্য যদি আপনার মনে বিন্দু মাত্র কিছু থাকে তাহলে আপনি আমায় আগে মেসেজ দিবেন আমি চ্যালেঞ্জ করলাম।।
- আমিও দিবো না। রাগ শুধু আপনার না আমারও আছে
- ওকে
- টাটা

অফলাইন হয়ে গেলো মালিহা। আমি তখনও অপেক্ষা করছি মালিহার মেসেজের জন্য। রাত বারটা অবধি অপেক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়লাম।।

পরের দিন সকালে মালিহাকে অনলাইনে দেখলাম আমাকে কোন মেসেজ দেয়নি মালিহা। আমিও মেসেজ করিনি। যদিও মনটা বড্ড চাচ্ছে মালিহার সাখে কথা চলতে তবুও নিজেকে সামলে নিচ্ছি। সকাল থেকে দুপুর হলো মালিহা কোন ফোন/মেসেজ দেয়নি আমাকে। আমিও আগে আগে দিচ্ছি না। মনে মনে ভাবলাম রাত পর্যন্ত দেখি। যদি মালিহা আগে মেসেজ না করে আমি না হয় রাতে করবো। কিন্তু সে পর্যন্ত যেতে হলো না। বিকেল বেলা ঘুমুচ্ছি আমি হটাৎ মোবাইলের রিং বেজে উঠলে। মোবাইলের স্কিনে তাকিয়ে দেখি মালিহার ফোন। রিসিভ করতেই মালিহা বলে উঠলো অনলাইনে আসেন। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সময় বিকেল চারটা বাজে। আমি অনলাইনে যেতেই মালিহা মেসেজ করলো আজ আপনাকে জিতিয়ে দিলাম ধন্যবাদ দিবেন না? আর হ্যাঁ পরে সব ফিরিয়ে দিবো আজ আমি হেরে আপনাকে জিতিয়ে দিলাম।।


লিখাঃ রাকিব মাহমুদ
₪ [ post no: 58 ]

Popular posts from this blog

₪ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম [post no:-22]

হ্যাপি কাপল

₪ ছেলেটি মেয়েটাকে অনেক ভালোবসতো [post no:-18]

বড় বোন থাকার ১৫টি মজার দিক

₪ বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় [post no:-16]

মাইকেল জ্যাকসন 150 বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন

রিয়্যাক্টর কিং

একটি মেয়ের গল্প

অবহেলা

₪ ছোট বোনের থেকে টাকা ধার [post no:-27]