ব্যর্থতার জীবন
আমাকে না পাওয়ার ব্যথায় যে ককিয়ে উঠেছিলো, তাকে আমি সর্বদা ছুড়ে ফেলেছি। এক বুক ভালোবাসা নিয়ে ফিরে আসতো বারবার। প্রতিবারই আমি তাহার বুকে খঞ্জর চালিয়েছি। সে রক্তাক্ত হয়ে ও শুধু আমায় চেয়েছিলো। সে কেবল আমার হতে চেয়েছিলো।
আমি তাহার ভালোবাসার গভীরতা মাপতে পারতাম। ঠিক জীবন দেওয়া ভালোবাসা। কথায় আছেনা অতি সুখ কপাল বইতে পারেনা। ঠিক আমি ও পারিনি। বরাবরই নিষ্ঠুরতার চরম শীর্ষে আমি। একটু মিষ্টি করে কথা বলার সময় আমার হতো না। অবহেলা আর অপমানে চোখ ভিঝতো মেয়েটার। টের পেতাম। কিন্তু হৃদয়ের নরম জায়গাটায় তাহার জন্য মায়া জন্মাতো না।
দিনের পর দিন মানুষটা শুধু আমার পরিচয়ে বাঁচতে আকুতি করেছিলো৷ স্বপ্ন ইচ্ছাগুলো যখন বলতো মুহূর্তেই পানি ঢেলে ভেস্তে দিতাম। ভাঙ্গা চোরা সব কুড়িয়ে ও সে ফিরে আসতো একটু ভালোবাসা পাবে বলে।
মানুষটা আজ নিস্তব্ধ। আগের মতো বেহায়া নয়। বদলে গেছে অনেক। এখন আর মনে করেনা আমায়। অনলাইন থাকলে ও নক দেই না। হুটহাট কল দিয়ে খোঁজ নেয় না। মানুষটার বদলে যাওয়া সহীহ ছিলো। এতো অবহেলা আর কষ্ট পাওয়ার পর ও কেনো মানুষটা পিছন পিছন অসহায়ের মতো ঘুরবে! ফের কষ্ট পাওয়ার কোনো মানে হয়?
মানুষটাকে জীবিত থাকতেই মেরে ফেলেছি। কষ্ট দেওয়ার মধ্যেও বোধহয় একটা পৈশাচিক আনন্দ পাওয়া যায়। আমি তাকে আপন করতে পারিনাই। একটা হাসি উপহার দিতে পারিনি। দিয়েছি শুধু তিক্ত কিছু স্মৃতি। করার ছিলো না কিছুই৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাইলে ও আপনি সব ঠিকঠাক মন মোতাবেক করতে পারবেন না। নিঃশব্দে এড়িয়ে ফের চলে আসবেন।
একসময় আমিও কারো জন্য ঠিক এভাবেই কাতরে ওঠতাম। মন ভেঙ্গে দিয়েছিলো বাজে ভাবেই। এরপর থেকে আর ভালোবাসা হয়ে উঠেনি। চেষ্টা করেছি খুব। পারিনি। কিন্তু যে মানুষটা আমারে ভালোবাসিয়া কষ্ট পেয়ে ফিরে যেতো, তখন মনে পড়ে যেতো আমার ফিরে আসা। এমনিভাবে তো একদিন আমিও ফিরেছিলাম। অথচ কিছুই করতে পারলাম না। একটা ভাঙ্গা মানুষ চাইলে ও সব করতে পারেনা। তাছাড়া আরো পারিবারিক পরিস্থিতি ছিলোই। পারিনি আমি সফল হতে। না দিয়েছি তাকে সফল হতে।
লিখা: মুশফিকুর রহমান।