আকাশ দেখবো

তাকে ফোন দিবো কি দিবো না এটা ভাবতে ভাবতেই দেখি রাত ২ঃ৪৫ বেজে গিয়েছে। ৫ ঘন্টা যাবৎ খালি ভাবছিই । এখনো বুঝতে পারছিনা দিবো কি দিবো না!কোন অধিকারে দিব কল! দিয়েই বা কি বলবো!

নাহ কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা । কালের বিবর্তনে আমাদের সুস্থ রিলেশন টা কেমন যেনো অসুস্থ হয়ে গিয়েছে । আমাদের মধ্যে যে ফ্রেন্ডশিপটা ছিলো তারও অবশিষ্ট কিছু নেই বললেই চলে।

তাকে কল না দিয়েও যে শান্তি পাচ্ছিনা । যদি আবার ইগনোর করে তাহলে কষ্ট টা তো আরো বেশি পাবো । মনের অশান্তিটা আরো বেড়ে যাবে।

একটা সময় ছিলো যখন কল দিতে কোনো দ্বিধাবোধ ছিলোনা কারোমাঝেই । রাত দিন যখন ইচ্ছে কল দিয়ে দিতাম সেও দিতো । তার কলের জন্যই যেনো অপেক্ষা করে থাকতাম । কি সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলি । আর আজ তা সব বদলে গেছে । গত ৩ বছর যাবৎ এমনি চলে আসছে সব কিছু । যা আগে খুব বেশি স্বাভাবিক ছিলো আজ তা অনেক বেশি অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। চাইলেও আর আগের মতো কিছু হওয়া সম্ভব না । সে তার মতো জীবনে এগিয়ে গিয়েছে আমি আমার মতো । কিন্তু কোথাও একটা পিছুটান রয়ে গিয়েছে । তাইতো আজও আমি তার কথা ভাবি । মাঝে মাঝে হঠাৎ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে তাকে কল দিতে ইচ্ছে করে । কিন্তু দেওয়া আর হয়ে উঠে না ।

কখনো কখনো মনে হয় সবার কথা ভুলে যাই । কি দরকার এতো সবার কথা ভাবার! একটু তো নিজের কথা ভাবাই যায় । নিজের ভালোলাগা নিয়ে ভাবা কি পাপ! পরক্ষণে মনে পরে তার কথা, সে বলেছিলো,

"আমাদের ভালোলাগা নিয়ে ভাবলে যে সবাই অসুখী হবে । কাছের মানুষদের কষ্টে রেখে না আমি ভালো থাকতে পারবো না তুমি! দুজন না হয় এক না ই হলাম কিন্তু দিন শেষে আমরা একজন অন্যজনের মনে তো থাকবো । কিছু অপূর্ণতা থাকা খারাপ কি বলো!"

সেদিন মুখ ফুটে কিছু বলতে পারিনি । আমার বলার প্রয়োজনও হয় নি সে নিজ থেকেই বুঝে নিয়েছিলো । তার থেকে আমাকে ভালো আর কে ই বা বুঝে!

এতসব চিন্তা করতে করতে দেখি ফযরের আজান দিয়ে দিয়েছে । নামাজ পড়ে আবার চিন্তা করলাম কি করা যায়।অবশেষে কল দিয়েই ফেললাম।

৪ বার রিং হওয়ার পড় ফোনটা রিসিভ হলো

ওপাশ থেকে, ঘুম ঘুম কন্ঠে

"সারা রাত কি এটাই ভেবেছো কল দিবে নাকি দিবে না!"
তার হাসির আওয়াজ পেলাম ।

"না আসলে তেমন কিছুনা । মানে আসলে! আচ্ছা তুমি বুঝলে কিভাবে?! "

ওপাশ থেকে,
"তোমাকে আমার থেকে ভালো কে চিনে বলো!"
বলেই হাসতে লাগলো

"এবার আমি লজ্জা পেলাম।কি না কি ভাবছে !এই ছেলেটা যে এতো বুঝে কেনো!"

ওপাশ থেকে,
"তোমার কাছে বলার কিছুই নেই আমি জানি । ছ মাস পর কল দিয়েছো! কিছু তো বলো!"

আমি একটু অভিমানি সুরে
"আমিতো তাও কল দিয়েছি । তুমি তো ভুলেও আমাকে কল দাওনা এমনকি কোনো টেক্সট ও না । আমি কল না দিলে তুমি কোনোদিন কলও দিবেনা!"

সে শব্দ করে হাসতে লাগলো,
"তোমাকে কল দেওয়ার কোনো কারণ যে আমার কাছে নেই।"

আমি চুপ হয়ে গেলাম।সে ও চুপ, কেউ কোনো কথা বলছি না।
ওপাশথেকে,
"এখন রাখছি নামাজ পড়বো। "

আমার কিছু বলার অপেক্ষা করলো না। ফোনটা কেটে দিলো।
আমি বারান্দায় চলে গেলাম । রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছি । দূর ঐ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি । চোখ দিয়ে একফোটা জল গড়িয়ে পড়লো ।
সুন্দর ঠান্ডা বাতাস বইছে । মনে অশান্তি কমতে লাগলো ।

আকাশের দিকে তাকিয়ে আজ খুব বলতে ইচ্ছে করছে ভালোবাসি । তার বুকে মাথা রেখে এই আকাশটা দেখতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু তা কি আর কোনোদিন সম্ভব!কোনোদিন তার কাছ থেকে ভালোবাসি শুনাও হলো না আর না বলা।

হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো
"ঘাড়ত্যারা" নামটা ভেসে উঠলো। ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো আমার । রিসিভ করলাম,

ওপাশথেকে
"আমার একটা ইচ্ছে আছে, এই ভোরের আকাশ দেখবো তোমাকে বুকের মাঝে নিয়ে"

বলেই ফোনটা কেটে দিলো । আমি আবার ব্যাক করলাম কিন্তু নাহ ফোনটা অফ।

আকাশের দিকে চেয়ে রইলাম এক অদ্ভুত শান্তি অশান্তির সংমিশ্রণ কাজ করছে


লিখাঃ tani tass ritt

Popular posts from this blog

₪ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম [post no:-22]

হ্যাপি কাপল

₪ ছেলেটি মেয়েটাকে অনেক ভালোবসতো [post no:-18]

বড় বোন থাকার ১৫টি মজার দিক

₪ বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় [post no:-16]

মাইকেল জ্যাকসন 150 বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন

রিয়্যাক্টর কিং

একটি মেয়ের গল্প

অবহেলা

₪ ছোট বোনের থেকে টাকা ধার [post no:-27]