ইদের রঙে তুমি আমি

যেই মানুষ টার কথা ভেবে আমি গত ইদ টাকে পুরোপুরি ভাবে মাটি করে দিয়েছিলাম?
ঠিক আজ ১বছর পরের এই ইদ টাকেও আমি সেই মানুষ টির কথা ভেবেই কাটিয়ে দিচ্ছি।

আমি বুঝিনা, আমাদের এই কিছু কিছু মেয়েদের কিছু কিছু স্বভাব না, যুগের পর যুগ পেরোলেও পাল্টাবে না!

রাত ১২টার পর থেকেই আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের ফোন আসতে শুরু করলো। কারো সাথেই কথা বললাম না শুধু রাহাত এর কাছ থেকে আগে উইশ পাবো বলে।
কিন্তু সে আর আমার কথা ভাবছে কোথায়?
দিব্যি হাত-পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমোচ্ছে!

ব্যস্ততার কারনে হোয়াটসঅ্যাপে আসতে পারছেনা সে।
অথচ ফেইসবুকে টাইমলাইন ভর্তি ইদের সেলফি দিয়ে। উইথ এই বন্ধু, সেই বান্ধুবি হ্যান ত্যান হাবিজাবি।

ফেইসবুকে যার সাথে পরিচয় সে আমার সাথে এড থাকতে ভয় পায় এখন। আমিও জোর করিনি। কারন আমার বন্ধু-বান্ধব এর সংখ্যা অনেক।
কমেন্ট বক্সে যাদের আইডি দেখলেই তার মাথায় আগুন।

অসভ্য টাকে একেবারে দিলাম ব্লক করে। মাঝে মধ্যে আনব্লক করে আপডেট নেই।

হুট করেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়াটা ছিলো ওর একটা বড় ধরনের শখ।
যথারীতি ইদের আগ হতে যোগাযোগ নেই সাড়ে তিন মাস।

খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে বেড়িয়েছি। গায়ে সেই শাড়িটা। যেটা পরে রাহাতের জন্মদিনে দেখা করার কথা ছিলো। হ্যাঁ! আজ ঐ অসভ্যটার জন্মদিন ই। কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই জানে!

পাশের ফ্ল্যাটে থাকা মিমির নাম্বার ভেসে উঠলো ওয়ালপেপারে।
'কিরে তুই? এইনা দেখলাম ক্লাসে যাচ্ছিস? আবার কল করলি যে?'

'আপু, সেদিন যেই ভাইয়া টার সাথে তোমাকে ঝগড়া করতে দেখলাম না?
তেমন করে দেখতে একটা ভাইয়া রক্ত মাখামাখি করে আমাদের হসপিটালে এসে হাজির। তুমি কি আসবে?

শুনে তো আমার কাপাঁকাপিঁ শুরু। রিকশা ভাড়া করে ছুটলাম।
সত্যি সত্যিই রাহাত। এক গুচ্ছ লাল গোলাপ আর শাড়ি উদ্ধার করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে বসে আছে।
আচ্ছা, এই ছিনতাইকারী সব ছেড়ে ছুড়ে ফুলের পেছন পরলো কেন?
তার প্রেমিকার জন্মদিন আজ? নাকি এই দিনে সে তাকে প্রথম দেখেছিলো।

যাইহোক, রাহাতের বন্ধু ইমন ও ছিলো সাথে। বি- পজিটিভ রক্ত লাগবে। গুরুতর কিছুনা তবে ডাক্তারের পরামর্শ।
এই ইদের ছুটিতে কে কোথায় ওর জন্য রক্ত নিয়ে বসে আছে শুনি?

আমি বলে বসলাম-
'ডক্টর, আমার ব্লাড গ্রুপ বি-পজিটিভ'

ইমন কে ডেকে সে ফিসফিসিয়ে বলছে-
'নিশীর ওজন তো ৪০। ও যেন রক্ত না দেয় আমায়।
'ওজন ৪০ ছিলো সেই খবর জানো, সাড়ে তিন মাসে যে ৯ কেজি বেড়েছি সেই খবর টা রাখা যাচ্ছিলো না?

খুব তো গরুর রক্ত গরুর রক্ত বলে ক্ষেপাতে। এমন ভাব যেন নিজের গায়ে বাঘের রক্ত। তা শেষমেশ এই আমাকেই কাজে লাগলো তো?

এই ইদের দিনে অসভ্য টাকে পাহারা দিচ্ছি হসপিটালের বেডের পাশে বসে বসে।
আমার রাগ ভাঙানো নিয়ে সেকি তার কাহিনী।

এক গুচ্ছ লাল গোলাপ চাই আর পছন্দের শাড়ি চাই!


লিখাঃ ফারজানা আক্তার মিলি

Popular posts from this blog

₪ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম [post no:-22]

হ্যাপি কাপল

₪ ছেলেটি মেয়েটাকে অনেক ভালোবসতো [post no:-18]

বড় বোন থাকার ১৫টি মজার দিক

₪ বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় [post no:-16]

মাইকেল জ্যাকসন 150 বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন

রিয়্যাক্টর কিং

একটি মেয়ের গল্প

অবহেলা

₪ ছোট বোনের থেকে টাকা ধার [post no:-27]