₪ সিদ্দিক ভাইয়ের আত্নকাহিনী [post no: 36]
ভালোই ঘুম দিয়েছিলাম হঠাৎ বউ টানাহেঁচড়া করতে লাগলো যেন আমি কোনো ধানের বস্তা। মাথায় চট করে ব্যথা উঠলো। ঘুম থেকে এভাবে আচমকা জেগে উঠলে যে কারোরই মাথা ধরা স্বভাবিক। বউকে কতবার বলেছি একটু নরম হউ বুঝলা। মেয়ে মানুষ নরমই মানায় এমন চেচামেচি করা ভালো না। বউ তখন গলার সাউন্ড আরো দশ গুন বাড়িয়ে বলে, কি বললা? আমি চেচামেচি করি? ভালো কথা বললেই আমি চেচাই। এখন তো চেচামেচি লাগবেই? পনেরো বছর এক মেয়ের সাথে এক বাসায় থাকলে ভালবাসার কথা বললেও চেচামেচি লাগে।
সবাই শুনেছেন কয় বছর? পনেরো বছর! হ্যাঁ ভাই এই দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে আমার নিজের বাসায় আমি নিজেই শান্তি মতো অক্সিজেনটুকু গ্রহণ করতে পারি না। নিজের বাড়িতে ঢুকলেই মনে হয় কোনো জেলখানায় ঢুকছি। জেলখানাতেও মনে হয় এর থেকে বেশী শান্তি। আমার ইচ্ছা জেলখানায় একবার ঢুকে এর এক্সপেরিমেন্ট করবো।
আমি চোখ কচলাতে কচলাতে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে?
-কী হয়েছে? বাথরুমে ভিজা লুঙ্গি রেখে এসে ঘুমিয়েছো কেন? ওটা কে শুকো দিবে প্রতিদিন? তোমার দাসী আমি? আমার শরীরকে শরীর মনে হয় না? আমার কাজ করতে কষ্ট হয়না? উঠে জলদি লুঙ্গি ধুয়ে শুকোতে দাও। আমি রোজ রোজ তোমার দাসীবৃত্তি পালন করতে পাড়বো না।
আরো কিছু এমন শুমধুর বানী শুনিয়ে বউ চলে গেলো। আমি উঠে লুঙ্গি ধুয়ে শুকোতে দিলাম। অনেকে আমাকে কাপুরুষ ভাবতে পারেন। তাহলে বীরপুরুষ আপনারা অবিবাহিত। আগে বিয়ে করেন তখন বুঝবেন বউয়ের কী ভালোবাসা।
বউ যে শুধু আজই আমাকে ঘুম থেকে টেনেহেচঁড়ে তুলছে তা নয়। এমন আরো অনেক মহৎ কাজের জন্য তুলছে। যেমন দরজায় লক না করা, ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খাওয়ার পর পুনরায় ফ্রিজে বাকি খাবার গুলো না রাখা,লাইট অন করে ঘুমানো,টিভি ছেড়ে ঘুমানো আর গুলা নাইবা বললাম।
আগে তবু ছুটির দিন বাহির থেকে ঘুরে আসতাম। আর এখন আছি হোম-করেন্টাইনে।
বউ টিভি দেখছিলো আমি অতি নম্র সুরে বললাম,একটু চা বানিয়ে দিবা? মাথা ব্যথা ধরেছে খুব। বউ বলল,ধরুক আমার ধরলে কে বানিয়ে দেয়? কালকের পর্বও মিস করেছি বিরক্ত করোনা পুনঃপ্রচার দেখছি। যাও নিজে বানিয়ে খাও।
এখন শুধু শেখ ফজলল করিমের কবিতার লাইন মনে পড়ে যায় কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর? মানুষেরি মাঝে স্বর্গ নরক, মানুষেতে সুরাসুর! এখন স্বর্গ কোথায় আমি জানিনা তবে নরকের দেখা পেয়েছি।
ছাদে উঠে বসে রইলাম মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আমার বন্ধুদের ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তাদের কী অবস্থা। জানতে পারলাম তাদের অবস্থা আরো করুন। শফিক রান্না করছে, আশরাফুল কাপড় ধুচ্ছে আর আব্বাসের বউ আব্বাসকে জোর করে সিরিয়াল দেখাচ্ছে এটাই নাকি তার শাস্তি।
এসব শুনে আমার মন খুশিতে নেচে উঠলো ভাবলাম আমি তো এদের থেকে অন্তত ঠের ভালো আছি। অনেক দিন প্রান খুলে হাসিনা। তাই জোরে জোরে হাসছি। বউ হঠাৎ এসে চিলের মতো ছু মেরে ফোনটা হাতে নিয়ে ডায়ালপ্যাড চেক করতে লাগলো। আচমকা এমন আক্রমণে আমার হাসিও উড়ে গেলো।
লিখাঃ- রাইসা ইয়াসমিন স্বর্ণা
সবাই শুনেছেন কয় বছর? পনেরো বছর! হ্যাঁ ভাই এই দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে আমার নিজের বাসায় আমি নিজেই শান্তি মতো অক্সিজেনটুকু গ্রহণ করতে পারি না। নিজের বাড়িতে ঢুকলেই মনে হয় কোনো জেলখানায় ঢুকছি। জেলখানাতেও মনে হয় এর থেকে বেশী শান্তি। আমার ইচ্ছা জেলখানায় একবার ঢুকে এর এক্সপেরিমেন্ট করবো।
আমি চোখ কচলাতে কচলাতে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে?
-কী হয়েছে? বাথরুমে ভিজা লুঙ্গি রেখে এসে ঘুমিয়েছো কেন? ওটা কে শুকো দিবে প্রতিদিন? তোমার দাসী আমি? আমার শরীরকে শরীর মনে হয় না? আমার কাজ করতে কষ্ট হয়না? উঠে জলদি লুঙ্গি ধুয়ে শুকোতে দাও। আমি রোজ রোজ তোমার দাসীবৃত্তি পালন করতে পাড়বো না।
আরো কিছু এমন শুমধুর বানী শুনিয়ে বউ চলে গেলো। আমি উঠে লুঙ্গি ধুয়ে শুকোতে দিলাম। অনেকে আমাকে কাপুরুষ ভাবতে পারেন। তাহলে বীরপুরুষ আপনারা অবিবাহিত। আগে বিয়ে করেন তখন বুঝবেন বউয়ের কী ভালোবাসা।
বউ যে শুধু আজই আমাকে ঘুম থেকে টেনেহেচঁড়ে তুলছে তা নয়। এমন আরো অনেক মহৎ কাজের জন্য তুলছে। যেমন দরজায় লক না করা, ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খাওয়ার পর পুনরায় ফ্রিজে বাকি খাবার গুলো না রাখা,লাইট অন করে ঘুমানো,টিভি ছেড়ে ঘুমানো আর গুলা নাইবা বললাম।
আগে তবু ছুটির দিন বাহির থেকে ঘুরে আসতাম। আর এখন আছি হোম-করেন্টাইনে।
বউ টিভি দেখছিলো আমি অতি নম্র সুরে বললাম,একটু চা বানিয়ে দিবা? মাথা ব্যথা ধরেছে খুব। বউ বলল,ধরুক আমার ধরলে কে বানিয়ে দেয়? কালকের পর্বও মিস করেছি বিরক্ত করোনা পুনঃপ্রচার দেখছি। যাও নিজে বানিয়ে খাও।
এখন শুধু শেখ ফজলল করিমের কবিতার লাইন মনে পড়ে যায় কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর? মানুষেরি মাঝে স্বর্গ নরক, মানুষেতে সুরাসুর! এখন স্বর্গ কোথায় আমি জানিনা তবে নরকের দেখা পেয়েছি।
ছাদে উঠে বসে রইলাম মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আমার বন্ধুদের ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তাদের কী অবস্থা। জানতে পারলাম তাদের অবস্থা আরো করুন। শফিক রান্না করছে, আশরাফুল কাপড় ধুচ্ছে আর আব্বাসের বউ আব্বাসকে জোর করে সিরিয়াল দেখাচ্ছে এটাই নাকি তার শাস্তি।
এসব শুনে আমার মন খুশিতে নেচে উঠলো ভাবলাম আমি তো এদের থেকে অন্তত ঠের ভালো আছি। অনেক দিন প্রান খুলে হাসিনা। তাই জোরে জোরে হাসছি। বউ হঠাৎ এসে চিলের মতো ছু মেরে ফোনটা হাতে নিয়ে ডায়ালপ্যাড চেক করতে লাগলো। আচমকা এমন আক্রমণে আমার হাসিও উড়ে গেলো।
লিখাঃ- রাইসা ইয়াসমিন স্বর্ণা