Posts

Showing posts from April, 2020

প্রত্যাবর্তন

আজ আমার ছাত্রী রিমির বিয়ে। বাসায় গিয়ে পড়াতাম একটানা ৫ বছর। এখন অর্নাস সেকেন্ড ইয়ার। ছেলে বিসিএস ক্যাডার। হাতছাড়া করেনি পরিবার। রিমি ছোট্র একটা মেসেজ দিয়েছে আমাকে এই বিয়েতে আমার মত নেই। আমি আর কি বলবো। ভালো কোন পাঙ্জাবিও নেই আমার। মেসমেট জহিরের পাঙ্জাবিটা নিয়ে গায়ে চাপালাম। খুব যে মানিয়েছে তা বলা যাবেনা। চশমা খুজছি। চোখে দিলাম। যখন ওদের বাড়িতে গেলাম,দেখলাম ৪ তলা বাড়িটা নিয়ন বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। বাড়িতে কতশত মেহমান। ধনীদের সাথে নিজেকে মানানোটা বড্ড কঠিন। রাত প্রায় ১০ টা বাজতে চলল। ক্ষুধা লেগেছে একটু। এক টেবিলের কোনে বসলাম। হঠাৎ রিমি এসে আমার হাত ধরেছে কুৃত্তার বাচ্চা আমারে অন্য ছেলের হাতে তুলে দিয়ে তুই গিলছিস। ওঠ আজকে তোরে খুন করবো। এই রিমিকে আমি কখনও দেখিনি,,,শুনেছি বড্ড রাগী। আমিতো অবাক রিমির সাথে আমার এমন কোন সম্পর্ক নাই। আমি বললাম, কি বলছো এসব তুমি। আমি কি করলাম। থামো রিমি, বাড়ি ভর্তি মেহমান। এই কুত্তা তুই জানিস না আমি তোরে পছন্দ করি। আমি তোকে ছাড়া বাচবোনা। তুই আমাকে কখনও বুঝেছিস। এই ছুড়ি দিয়ে আজ তোরে আমি খুন করবো। ততক্ষনে বাড়ির সব মেহমান চলে এসেছে। রিমির চোখ দিয়ে টপটপ

স্মরণীয় রাত

স্বামী-স্ত্রীর স্মরণীয় রাত জীবনে একবার হয়।কিন্তু আমার জিবনে আরেকটা স্মরণীয় রাত এসেছে।আর সেই রাত থেকে বাকী সবগুলো রাত আমার জন্য স্মরণীয় রাত হয়ে গেলো।আমি বিয়ে করেছি মাত্র দুইদিন।আমার স্ত্রী তেমন ফর্সা না।শ্যামলা, তবে আমার কাছে আমার স্ত্রীকে দেখলে খুব মায়া লাগে।সেই যখন ঘুমায় আমি তখন ইচ্ছা করে রাত জেগে তাকে দেখিয়।আমার চোখে চোখ পড়লে আমার স্ত্রী লজ্জা পায়।তাই আমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি। রাতে খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে গেছে।আমার স্ত্রী ইফতি আক্তার (জান্নাত) সেই ঘুমাচ্ছে।ইফতি ঘুমানো অবস্থা আরো সুন্দর লাগে।এইদিকে আমার স্ত্রী লজ্জাবতী চোখে চোখ পড়লে লজ্জা করে তাই আমি রাত জেগে ইফতিকে দেখতেছি।দেখতে দেখতে কখন জানি ঘুম চলে আসছে আমার। রাত তখন ৩টা বাজে।ইফতি অামাকে বলে- - এইয় শুনছেন উঠুন না। - কেন!এতরাতে উঠে কি করবো? - নামাজ পড়তে। - মাত্র ৩টা বাজে এখন কিসের নামাজ। ফজরের আজান দিতে আরো দেরি আছে এখন ঘুমাও তো। - সেটা আমি জানি,তবে এখন তাহাজ্জুদের নামাজ পড়বো।তাড়াতাড়ি উঠেন। - তুমি পড়ো, আমি কালকে পরবো। - কালকে যদি আমি মারা যাই তাহলে কি করবেন। এই কথা শুনে অামার কেমন জানি খারাপ লাগছে কেন তা জান

নাড়ির টান

"তোর মতো বয়সে থাকতে আমি চার সন্তানের মা ছিলাম, আর বুড়ি হয়ে যাইতাছস এখনও বিয়া করতে ইচ্ছা করেনা। কয়দিন পরে বুইড়া ব্যাটা সাথে ছয় পোলার বাপ সে ও আসবোনা তোরে বিয়া করতে"! উপরের কথা গুলো আমার নানু মালেকা খাতুনের। উনার নাম মালেকা খাতুন কিন্তু উনাকে সবাই মালেকা সুন্দরী বলেই চিনেন। তার বয়স যখন ১০ বছর তখন তিনি আমার নানার বউ হয়ে আসেন। বলে রাখা ভালো সেকালে তার মতো সুন্দরী নাকি খুব কম ই ছিল গ্রামে। সেই ক্ষেত্রে আমি বলবো নানার আমার বিরাট ভাগ্য এমন রগচটা সুন্দরী কে বউ হিসেবে পেয়েছিলেন। কারণ কোন এক কবি বলেছিলেন নারী তেজি না হলে নারীত্ব ভাবটা নাকি লোপ পায়। নানা ভাই মারা গেছেন যখন আমার চার মাস বয়স তখন, আর এখন আমার বাইশ চলে। অতঃএব বলাই যায় দীর্ঘ ২২ বছর স্বামী ছাড়া থেকে এখন কাউকে স্বামী ছাড়া দেখলে তার সহ্য হয়না। অন্য কারোর টা বলতে পারিনা আমায় দেখলে তার সহ্য হয়না হাতের কাছে যা পান তা নিয়েই তেড়ে এসে আমার মা কে ডেকে বলে শাহ্জাদী তোর মাইয়া রে কিছু বল, ঢিঙ্গি মাইয়া বিয়া দেস না আমার বাড়ি আইয়া খালি আমার লগে লাগে। হুম নানু কথাটা মিথ্যা বলেনি তাকে দু'য়েক কথায় না ক্ষেপিয়ে দিলে অন্তত সেদিন আমি ভাত খেতে

ভ্রম

ফারুক সাহেব এরশাদনগর বাসস্ট্যান্ডের পাশের একটা ছোট্ট দোকানের মালিক। খুব দামি দোকান না, একটা স্টেশনারী দোকান। কম্পিউটার আছে একটা, ফটোকপি করা হয়। দোকানের সামনের দিকে একটা সেগুনকাঠের টেবিল পাতা আছে। আর আছে দুটো চেয়ার। পাশাপাশি রাখা। একটায় ফারুক সাহেব নিজে বসেন,অন্যটা তার দোকানের সহকারীর জন্য। সহকারী বলা ঠিক হবে না, একটা ২৪/ ২৫ বছর বয়সী ছেলে শুরু থেকেই এই দোকানে কাজ করে,নাম মিরাজ।দোকানের নাম আল-মদিনা স্টেশনারী। টেবিল চেয়ার গুলোর পেছনে তাকে সাজানো রয়েছে হাজার হাজার বই-পত্র। আর আছে খাতা-কলম,পেন্সিল-রবার, কাটার এইসব। আর দোকানের এক কোনায় একটা টেবিলের ওপর একটা পুরানো মডেলের কম্পিউটার। মিরাজকে অত্যন্ত স্নেহ করেন ফারুক সাহেব। বিয়ে করেননি তিনি।মিরাজও তাই ঠিক করেছে,বিয়ে করবে না।ফারুক সাহেবের বয়স চুয়াল্লিশ হলো। মিরাজ ছেলেটা অল্পবয়সী।তার বিয়ে না করার কারণ হলো তার ওস্তাদ বিয়ে করেননি। অস্তাদ হলেন ফারুক সাহেব। অবশ্য ওস্তাদ মত বদলালে অন্য কথা। ফারুক সাহেবের প্রতিদিন সকালের রুটিন ঠিক করা।সেটা এমন যে, সাড়ে সাতটার সময় দোকানে এসে নিজের চেয়ারে বসে খবরের কাগজ পড়বেন। প্রতিদিন সকালে ছয়টার একটু পরেই খবরের কাগ

₪ ভুল [post no : 49]

ভাবি আপনার চুল তো অনেক সুন্দর।কথাটা বলা মাত্রই নাবিলার আনন্দ হবার কথা ছিল।মেয়েরা নিজের প্রশংসা অন্যের মুখে শুনতে ভালোবাসে কিন্তু নাবিলার মুখটা মলীন হয়ে গেল।নাবিলার পিছনেই দাড়িয়ে আছে জোবায়ের। রনি হেসে জোবায়ের এর দিকে তাকিয়ে বলছে কি ভাই বউয়ের প্রশংসা করছি বলে রাগ হচ্ছেন নাতো। জোবায়ের কোন কথাই বলছেনা। নাবিলা মাথা নিচু করে চলে গেল। নাবিলা রান্না ঘরে রান্না করছে।জোবায়ের সিগারেট মুখে নিয়ে বলছে ছাদ এ কাপড় শুকাতে যাও নাকি চুল দেখাতে? নাবিলা: মানে? জোবায়ের সিগারেট মেঝেতে ফেলে চলে গেল। সারাদিন জোবায়ের মুড অফ করে আছে।এরকম টা নতুন না।নাবিলার রূপের প্রশংসা যদি কোন ছেলে করে তাহলে এমন করেই থাকে।বিয়ের পর এমন অনেক ঘটেছে।নাবিলা জোবায়েরের মন রক্ষার জন্য নিজেকে গুটিয়ে রাখার ট্রাই করে কিন্তু তাও পারেনা। এইতো কয়েক বছর আগে জোবায়েরের বন্ধু বলেছিল নীল শাড়িতে ভাবিকে বেশ মানায়।জোবায়ের রেগে সব নীল শাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আজ চুলের প্রশংসা করেছে তাই বলে তো আর চুল পুড়িয়ে দিতে পারেনা। জোবায়ের ভাত খেতে আসো,এই বলে দরজার পাশে দাড়িয়ে আছে নাবিলা। জোবায়ের: ভাত খাব না। নাবিলা: ভাত না খাবার কি আছে?আমি যে কষ্ট করে রান্না

₪ কন্যা [post no: 48]

বিকাল ৩ টার দিকে ব্যাংক ছুটি হতেই ব্যাংক থেকে তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে পড়লাম। পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা লাগতেছিল তাই। তাই তাড়াহুড়া করে রাস্তা পার ঠিক তখনি একটা সাইকেলের সাথে ধাক্ষা লাগে। পেটের ক্ষুধায় মাথার ঠিক নাই, তাই সামনে পেলাম একটা আধলা ইটের টুকরা, সেটা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম যে সাইকেল ওয়ালার মাথার বারটা বাজাব বলে। পিছন ফিরে চেয়ে দেখি একটা ফুটফুটে সুন্দর পরীর মত মেয়ে। মেয়েকে দেখে পেটের ক্ষুধা মিটে গেল। আমি অপলক দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি, আর ভাবছি মেয়েটাকে আল্লাহ কী দিয়া বানাইছে। মেয়েটার বয়স আনুমানিক ১৯ বছর হবে। মেয়েটা এত সুন্দর যে মেয়েটাকে দেখে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে। এদিকে মেয়েটির ঝাড়ি মারা কথায় আমার হুশ ফিরে এল? " কী ব্যপার এভাবে হা করে তাকিয়ে আছেন কেন? " (মেয়েটি) "দেখছি , পরীকে দেখছি" (আমি) " ফাজলামু বন্ধ করেন আর, ধাক্কার জন্য সরি" (মেয়েটি) "ঠিক আছে"(আমি) "আচ্ছা তুমি এত গুলোমুলো কেন?" (মেয়েটি) দিলত আমার মেজাজটা নষ্ট করে। এই সবাই কেন আমাকে গুলোমুলো ডাকে আমি নিজেও জানি না, তাই আর কোন কথা না বলে উল্টো দিকে হাটা শুরু করলাম। মেয়েটি

₪ চন্দ্রাঘাত [post no: 47]

আমার বউয়ের নামে প্রতিদিন একটা করে পার্সেল আসে । পার্সেলের গায়ে কোনো প্রেরকের ঠিকানা থাকে না । কিন্তু প্রতিটি পার্সেলই কুরিয়ার সার্ভিস থেকে আসে । কোনোদিন বিকেলে আবার কোনোদিন সন্ধ্যায় অথবা রাতে আসে । বেশিরভাগ পার্সেলই রাতে আসে । আমি অফিস থেকে ফেরার পর নিত্য দিন এই ঘটনা ঘটছে । যেদিন রাতে পার্সেল আসে না সেদিন আমি বউকে জিজ্ঞেস করলে বলে -আজ কোনো পার্সেল আসেনি । কিন্তু আমি বুঝতে পারছি , বউ আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছে । আমার বিশ্বাস বউয়ের কোনো প্রাক্তন এসব পাঠাচ্ছে। এবং বউ সেটা জানে । আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে প্রতিটি পার্সেলের ভেতরেই ফাঁকা ।কোনো কিছু নেই । শুধু শুধু ফাঁকা পার্সেল পাঠানোর ইঙ্গিত আমি এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না । বিষয়টি নিয়ে বউয়ের সাথে ইদানীং ঝগড়া লেগেই আছে । পার্সেলের প্রাপকের জায়গা খুব সুন্দর করে লেখা থাকে ""জান্নাত"" । আর এড্রেসে থাকে , কলেজ রোড , কাটাই খানা মোড়, কুষ্টিয়া । হোল্ডিং নাম্বার ৩৬ । হ্যাঁ এই বাড়িতেই আমি থাকি । এর আগে এমন আশ্চর্য জনক ঘটনা আর ঘটেনি । ভাড়া বাসার তিনতলায় আমরা থাকি । দুটো মাঝারি সাইজের রুম । পাশের ফ্ল্যাটে অন্য এক পরিবার থাকে । সেইভাবে